সাড়ে ৮ বছর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন শেষে আবারও পূর্বের পেশা সবজি ব্যবসায় ফিরেছেন আব্দুর রশিদ।চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাট উপজে’লার গোহালবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদে ২০০৩ সালে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়ে টানা সাড়ে ৮ বছর দায়িত্ব পালন করেন তিনি। ওই সময় এলাকার ব্যাপক উন্নয়ন করেন তিনি। অন্যরা জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হয়ে সম্পদের পাহাড় গড়লেও তিনি নিজের সামান্য সম্পদটুকুও মানুষের মাঝে বিলিয়ে দিয়েছেন।
এখন সবজি ব্যবসা ও গরু পালন করেই ২ ছে’লে ও ৩ মে’য়ের লেখাপড়া চালিয়ে যাচ্ছেন। এক সময় তিনি রিকশা-ভ্যান চালাতেন। তাই এলাকায় তিনি ভ্যান চেয়ারম্যান নামেই পরিচিত।
গোহালবাড়ি ইউনিয়নের মো. নাজিমুদ্দীন জানান, আম’রা সকলে আলোচনা করে সৎ ও ভালো মানুষ হিসেবে আব্দুর রশিদকে ২০০৩ সালে চেয়ারম্যান পদে ভোটে আংশগ্রহণের জন্য বললে উনি রাজি হন। এরপর স্থানীয়রা নিজেদের টাকা খরচ করে রশিদের পক্ষে নির্বাচনী প্রচরণা শুরু করি এবং তিনি বিপুল ভোটে চেয়ারম্যন নির্বাচিত হন। তার কাজে আম’রা সকলেই খুশি।
একই এলাকার মো. সমির আলী বলেন, ৬০ বছরে এত ভালো চেয়ারম্যান দেখিনি। ওই সময় এলাকার ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। এর আগে কোনো জনপ্রতিনিধি এত উন্নয়ন করেননি। আম’রা চাই তিনি এ বছরও নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুন।
আব্দুর রশিদের স্ত্রী’ আকলিমা বেগম বলেন, কেউ চেয়ারম্যন নির্বাচিত হলে টাকার পাহাড় গড়ে। আর আমা’র স্বামী চেয়ারম্যান হয়ে নিজের যা ছিল তাও মানুষের মাঝে বিলিয়ে দিয়েছেন। এতে করে আম’রা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলেও আমাদের খা’রাপ লাগে না। কারণ তিনি মানুষের উপকার করেছেন এবং তার কাজে আম’রা পরিবারের সবাই সর্বাত্মক সহযোগিতা করেছি।
একান্ত সাক্ষাৎকারে সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুর রশিদ জাগো নিউজকে বলেন, স্থানীয়রা আমাকে ইউনিয়ন পরিষদে মেম্বার পদে নির্বাচন করার পরাম’র্শ দেন। আমি তাদের বললাম নির্বাচন যদি করতেই হয় তাহলে চেয়ারম্যন পদে করব। তারপর তারাই টাকা জমা দিয়ে দেয়। এলাকার মানুষ অর্থ, বুদ্ধি ও পরাম’র্শ দিয়ে সর্বাত্মক সহযোগিতা করেন। সবাই মিলে ভোট দিয়ে আমাকে পাস করিয়ে দেন। গোহালবাড়ি ইউনিয়নে ২০০৩ সালে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হওয়ার পর ২০১১ সাল পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৮বছর পরিষদ পরিচালনা করি। অর্থের প্রতি আমা’র কোনো লো’ভ না থাকায় আমি কোনো সম্পদ গড়িনি বা ভবিষ্যতেও করবো না। অর্থ জমা করে কিছু করব এ চিন্তাধারা আমা’র এখনও নেই, আগেও ছিল না। ওই সময় যে অর্থ বরাদ্দ পেয়েছি তার সবটাই এলাকার উন্নয়নে খরচ করে দিয়েছি।
তিনি বলেন, ২০১১ সালে আমা’র মেয়াদ শেষ হওয়ার পর আবারও সবজি ব্যবসায় ফিরে আসি। পরের জমি বর্গা নিয়ে সবজি চাষ করি। আর ওই সবজি বাজারে এনে বিক্রি করি। এছাড়াও বাড়িতে গরু পালন করি। এত যে আয় হয় তা দিয়েই সংসার ও পাঁচ সন্তানের লেখাপড়ার যোগান দিতে হয়। এসব কাজে পরিবারের সকলেই সহযোগিতা করে।
২০২১ সালের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে যদি পরিবেশ পরিস্থিতি ভালো থাকে তাহলে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে চেয়ারম্যান পদে আবারও আংশগ্রহণ করবেন বলে জানান সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুর রশিদ।